মুরগির খামারে সফল হয়েছেন প্রকৌশলী ইমরুল। সম্পূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত উপায়ে মুরগি পালন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই আগ্রহী হয়ে অর্গানিক উপায়ে মুরগি পালনে আগ্রহী হয়েছেন। তার কাছ থেকে অনেকেই মুরগির খামার বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন।
জানা যায়, ইমরুল বুয়েট থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। ২০০৩ সালে বুয়েট থেকে পাস করার পর দীর্ঘদিন দেশে ও বিদেশে টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন ও কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ইমরুল মুরগির খামারের যাত্রা শুরু করেন।
অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত উপায়ে মুরগি পালনের শুরুটা ভালো ছিল। প্রথম দুটি ব্যাচে কোনো ঝামেলা হয়নি, কারণ, সময়টা শীতের। তবে গরম আসার পরই হোঁচট খেতে হলো। পরপর দুবারই অধিকাংশ মুরগি মারা গেল। কর্মীরা ইমরুলকে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পরামর্শ দেন। কিন্তু তার তত দিনে জেদ চেপে গেছে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া মুরগি পালনের।
অর্গানিক মুরগি পালনের জন্য নিজেই মুরগির ফিড তৈরি করতে শুরু করলেন। গ্রোথ প্রমোটার, মিল বোন মিট ও হরমোন ছাড়া ফিড বানান নিজে। দানাদার খাবার তৈরির জন্য ডিজাইন করলেন মেশিন। চীন থেকে সেটি তৈরি করেও আনলেন। মুরগির নিয়মিত অ্যাপল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার, প্রাকৃতিক বিটেইন, অরেগানু, শজনেপাতা, কাঁচা হলুদ, রসুন, আদা, বিভিন্ন ধরনের শাক, পেঁপেপাতা, নিমপাতা, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি খেতে দেওয়া হয়।
একটি শেড দিয়ে শুরু করলেও এখন তিনটি শেডে চলছে কার্যক্রম। ইমরুলের খামারে মূলত ফরাসি হার্বার্ড প্রজাতির মুরগি পালন করা হয়। এক দিন বয়সী বাচ্চা নিয়ে আসা হয় হ্যাচারি থেকে। তারপর এগুলোকে শেডে পালা হয় ৫৫ থেকে ৬০ দিন। এর মধ্যে এগুলোর ওজন হয় ১ কেজি ২০০ গ্রামের মতো। তিন নম্বর শেডে পালা হয় ব্রয়লার। এখানেও ১ দিনের বাচ্চা এনে ৪০ থেকে ৪৫ দিন রাখার পর ২ কেজির বেশি ওজন হলে বিক্রি করা হয়। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ, উন্নত মানের খাবার ও ভালো মানের টিকার কারণে অর্গানিক মুরগির মূল্য বাজারদরের চেয়ে বেশি হয়। এ
প্রকৌশলী ইমরুল বললেন, আমাদের দেশে এই নিয়ম কঠোরভাবে মানা হয় কি না কে জানে। আমি চিন্তা করে দেখলাম আমি কোনোরূপ অ্যান্টিবায়োটিকবিহীন আমিষ সরবরাহের মাধ্যমে নিরাপদ খাবারের জন্য কাজ করতে পারি কিনা। যেহেতু নতুন প্রজন্ম মাছের চেয়ে মাংস বেশি পছন্দ করে তাই এই পোলট্রি খামার শুরু করা। আমার এই খামারটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে।
Courtesty: Adhunik Krishi Khamar